প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের প্রেক্ষাপটঃ
প্রিন্স উইলিয়াম ১৮৬১ সালে প্রশিয়ার সিংহাসন আরোহণ করে রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের জন্য ৩৯ খন্ডে বিভক্ত জার্মানকি একত্র করার লক্ষ্যে অটো ভন বিসমার্ককে ১৮৬২ সালে প্রুশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন।বিসমার্ক ক্ষমতা গ্রহণ করে 'পলিসি অব ব্লাড এন্ড আয়রন 'নীতির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ জার্মান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডেনমার্কের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং ডেনমার্ক কে পরাজিত করেন।এ কারনে বিসমার্ককে 'ব্লাড এন্ড আয়রন ম্যান বলা হয়।এরই ধারাবাহিকতায় স্যাডোয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়াকে ও সেডান যুদ্ধে ফ্রান্স কে পরাজিত করে জার্মানিকে একত্র করতে সমর্থ হন এবং ১৮৭১ সালে প্রিন্স উইলিয়াম কর্তৃক ঐক্যবদ্ধ জার্মানির 'রাজকীয় চ্যান্সেলর' পদে নিযুক্ত হন।পরবর্তীতে প্রধান প্রতিপক্ষ ফ্রান্সকে ইউরোপীয় শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার জন্য 'মিত্রতা নীতি' গ্রহণ করে আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম 'মৈত্রীজোট' গঠন করেন। এ মৈত্রীজোটের প্রধান সদস্য গুলো হলোঃজার্মানি,অস্ট্রো-হাঙ্গেরী,ইতালি ও রাশিয়া। পরবর্তীতে বিসমার্ককে পদত্যাগ এবং জার্মানির সাম্রাজ্যেবাদী আগ্রাসী চিন্তার কারণে মৈত্রীজোটের মধ্যে অবিশ্বাসের দানা বাধে এবং রাশিয়া এ জোট থেকে বের হয়ে এসে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে পাল্টা মৈত্রীজোট গঠন করে।
১৯০৭ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরী বলকান অঞ্চলের বসনিয়া দখল করলে সার্বিয়ার সাথে সম্পর্ক শীতল হতে শুরু করে। এর ফলে জাতীয়তাবাদী সার্বিয়ার জনগন অস্ট্রিয়ার ক্ষতি সাধনের জন্যে 'ব্ল্যাক হ্যান্ড' বা মৃত্যুসংঘ নামক গুপ্ত বাহিনী গঠন করে। এ গুপ্ত বাহিনীর সদস্য গ্যাব্রিলা প্রিন্স কর্তৃক ২৮ জুন ১৯১৪ সালে বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভো ভ্রমণরত অস্ট্রো-হাঙ্গেরীর ভবিষৎ সম্রাট প্রিন্স ফার্ডিনান্ড স্ত্রী সহ নিহত হন। এ অবস্থায় অস্ট্রিয়া সার্বিয়াকে হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব হিসেবে দায়ী করে ২৮ জুলাই ১৯১৪ সালে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে,যা ইতিহাসে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ নামে অভিহিত।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সমাপ্তিঃ
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ৩২ টি দেশের প্রতিনিধি বর্গ ১৮ জানুয়ারি ১৯১৯ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সমাপ্তির লক্ষ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের জন্য মিলিত হন।দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যালোচনার পর তারা ৭ মে চুক্তি পত্রের খসড়া সম্পাদন করেন।২৮ জুন ফ্রান্সের ভার্সাই রাজপ্রাসাদের 'হল অব মিরর'-এ মিত্রশক্তির সাথে জার্মানির শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিঃ
৮০ লক্ষ সৈন্য নিহত এবং ১ কোটি ১০ লক্ষ সৈন্য আহত হয়,পঙ্গু হয় ৬০ লাখ সৈন্য। সব মিলিয়ে ৯ কোটি ৪৮ লক্ষ এবং আহত হয় প্রায় ৯ কোটি।
0 Comments
Don’t comment any link
Emoji